পাহাড়ের রহস্য আর নারীর রহস্য একেবারেই এক রকম মনে হয়। প্রতিজন নারী একই মাটির তৈরী কিন্তু প্রতি জনকেই নতুন রকম রহস্যময় মনে হয়। দশ মিনিট নিঝুমভাবে উঁচু পাহাড়ের এক কোণায় গিয়ে বসে সমীকরণ মেলাবার চেষ্টা করেছি ! মহান আল্লাহর অপার সৃষ্টি এক এই প্রকৃতি !
উপর থেকে দাড়িয়ে নীচের দিকে তাকালে সব গাছ, ফুল, লতা, প্রেম কাঁটা, পাখি, বাতাসের বিচরণ, মেঘ সব একই রকম দেখাবে কিন্তু ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দ সারাদিন তীব্র রোদেও একই স্বরে বাজার সময় যেমন শব্দে তারতম্য হয় তেমনি পাহাড়ের রহস্যেও ঢেউটি লাগে খুব প্রগাঢ়ভাবে। নিস্তব্ধ দাঁড়িয়ে কুমারী মেয়েদের মত শারিরীক কার্ভ দেখানো প্রতিটি বৃক্ষই আমাকে বলেছে মাটির মায়া লাগানো গন্ধের কথা। খেয়াল করলাম ওদের বন্ধনে যাতে ভাগ না বসাতে পারে সেজন্য ওরা খাড়া হয়ে নীচে নেমে ভেতরের দিকে খাঁজ করে নিতেই বেশী পছন্দ করে আর এ কারণেই পাহাড় আরও খাড়া হতে থাকে। বিস্ময়কর এক ভয় কাজ করে আমার মধ্যে নীচের দিকে নামার সময়। পাহাড়ের নাভীমূলের কম্পনের সাথে নারীর নাভীমূলের কম্পনের কোন দূরুত্ব নেই। সরল রৈখিক প্রতিটি সম্পর্ক যেমন একে অপরকে আবৃত করে রাখে তেমনি পাহাড়ও তার পুরো শরীর জুরে জড়িয়ে রেখেছে নানান জাতের বৃক্ষ আর বৃক্ষের বন্দনা।
এখানে বৃক্ষের বন্দনা হল কচি ফুল আর লতানো গাছ। পাহাড়ে যারা গিয়েছেন তারা দেখে থাকবেন পাহাড়ের খুব উঁচুতে তা।
কি সরল ! আমরা যত উপরে উঠি তত গরল হই কিন্তু এখানে মানুষের সাথে পাহাড়ের বড় পার্থক্য। একেবারে মাথায় পাহাড়গুলো কখনই সমতল হয়না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা চায় প্রতিটি বিন্দুই উপরে উঠে যাক, প্রতিটি বিন্দুই আকাশ ছুঁয়ে দেখুক, মেঘ ছুঁয়ে দেখুক ! এই নমনীয়তাই পাহাড়কে জলের ঝিড়ি দেয়, এই সারল্যতাই পাহাড়কে জলপ্রপাত দিয়ে নারীর মত মমতার আশ্রয় হিসেবে প্রদর্শিত করে !
দশ মিনিটের পাহাড় দেখায় আরেকটি বড় উপলব্ধি ছিলো পাহাড়ে সবসময়ই জীবন্ত জল বিচরণ করে। মেঘ আর কুয়াশার পাশাপাশি এ জীবন্ত জলগুলো যে বাতাস সৃষ্টি করে তাতে আপনার মন নিশ্চিত নরম হয়ে উঠবে কারণ এ বাতাসটুকুই হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ থেকে উড়ে আসা সেই প্রেমিকের কান্নার বাতাস যে প্রেমিক চাতক পাখির মত বসে আছে তীব্র খড়ার পর বৃষ্টির মত হয়ে তার ভালোবাসার মানুষ তার কাছে ফিরবে এই অপেক্ষায়…
পাহাড় আর নারীর রহস্য কোনদিন উন্মোচিত হবে না তাই নদী ও নারীর যে সম্পর্ক ছিলো সে সম্পর্কে ভাগ বসানোর জন্য এখন পাহাড়কে আমন্ত্রন জানাতেই হবে আপনার !
বান্দরবানের নীলগিরি থেকে ফিরে…
loading...
loading...
ভ্রমণের নির্মেদ বর্ণনা পড়ে আনন্দিত হলাম সাঈদ চৌধুরী ভাই।
loading...
খুবই সুন্দর এবং পরিপাটি। আমাদের বাংলাদেশ। বান্দরবানের নীলগিরি আমার ভীষণ পছন্দের একটি জায়গা। একবার গিয়েছিলাম। আবারও যেতে মন চায়। ভালো লাগে।
loading...
প্রচণ্ড এই খরতাপে মন ছুটে গেলো বান্দরবানের নীলগিরি। মনকে শীতল করতে হবে।
loading...
পাহাড়ের রহস্য আর নারীর রহস্য একেবারেই এক রকম মনে হয়। ভ্রমণ পোস্টের শুরুটা তো অসাধারণই তারপর বর্ণনাও সুন্দর হয়েছে দাদা।
loading...
সরল রৈখিক প্রতিটি সম্পর্ক যেমন একে অপরকে আবৃত করে রাখে তেমনি পাহাড়ও তার পুরো শরীর জুরে জড়িয়ে রেখেছে নানান জাতের বৃক্ষ আর বৃক্ষের বন্দনা।
ভালো বিশ্লেষণ করেছেন।
loading...